
লাইফস্টাইল ডেস্ক ::
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো দিনের শুরুটা সঠিকভাবে করা। অনেকেই ভাবেন শুধু ওষুধ খেলেই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে, কিন্তু বাস্তবে সকালবেলার খাবার ও শরীরচর্চা এই নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি।
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া বড় ভুল। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে বা কমেও যেতে পারে। তাই ঘুম থেকে ওঠার এক ঘণ্টার মধ্যেই নাস্তা করা উচিত। পুষ্টিবিদদের মতে, সঠিক সকালের খাবার হওয়া উচিত জটিল শর্করা, প্রোটিন ও ভালো চর্বির ভারসাম্যে।
যেমন—এক বাটি ওটস বা লাল আটার রুটি, সঙ্গে ডিম বা ছোলার তরকারি ভালো বিকল্প। ইচ্ছা হলে এক কাপ চিনি ছাড়া গ্রিন টি খাওয়া যেতে পারে। অনেকে নাস্তার আগে ফল খান, তবে ফল বেছে নিতে হয় সতর্কভাবে। কলা, আম, আঙুরের মতো উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত ফলের পরিবর্তে আপেল, পেয়ারা, কমলা বা পেপে ভালো বিকল্প।
সকালের খাবারে কখনোই অতিরিক্ত তেল বা পরোটা-পুরি জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। এগুলো রক্তে চর্বি বাড়ায় এবং ইনসুলিনের কাজ ব্যাহত করে।
খাবারের সঙ্গে শরীরচর্চা যুক্ত করলে রক্তে শর্করার মাত্রা আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে। অনেকেই ওষুধ খাওয়ার পরপরই ব্যায়াম শুরু করেন, যা বিপজ্জনক হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়ামের সময় ও মাত্রা ঠিক করা জরুরি। সাধারণত সকালে হালকা নাস্তা খাওয়ার আধা ঘণ্টা পর দ্রুত হাঁটা, হালকা জগিং বা যোগব্যায়াম করা নিরাপদ।
ডায়াবেটিস রোগীদের দিনে অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। ব্যায়াম শুধু রক্তে শর্করা নয়, মানসিক চাপও নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে খালি পেটে ব্যায়াম না করাই ভালো, কারণ এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করা অতিরিক্ত কমে যেতে পারে।
সকালের এই ছোট রুটিন—সময়মতো নাস্তা, পর্যাপ্ত পানি পান ও নিয়মিত হাঁটাহাঁটি—দীর্ঘমেয়াদে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি হৃদ্যন্ত্র, কিডনি ও চোখকেও সুরক্ষা দেয়।
সূত্র: আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সোসাইটি, হার্ভার্ড হেলথ পাবলিকেশন