ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৬ নভেম্বর ২০২৫
  1. সর্বশেষ
  2. জাতীয়
  3. সারাদেশ

হাসিনা সরকার গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত: জাতিসংঘ

প্রতিবেদক
news
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

 

গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ধারাবাহিকভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার।
অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। প্যানেল সদস্য হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান ররি মাঙ্গোভেন, মানবাধিকার কর্মকর্তা জ্যোৎস্না পৌদ্যাল ও প্রধান মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি।

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিগত আওয়ামী লীগ সরকার, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত সহিংস গোষ্ঠীগুলো গত বছরের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন চলাকালীন ধারাবাহিকভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল।

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য এবং অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের এবং তাদের সমর্থকদের ওপর আক্রমণ ও সহিংস দমন-পীড়নের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক নীতি অনুসরণ করা হয়েছিল। এতে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা জরুরি ভিত্তিতে আরও অপরাধমূলক তদন্তের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে প্রায় এক হাজার ৪০০ জন নিহত হয়ে থাকতে পারেন। আহত হন হাজার হাজার মানুষ। তাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আহত হন। নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ শিশু ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ জানায়, ওই সহিংসতায় তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা প্রাণ হারান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল উচ্চ আদালতের সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। তবে এর মূল কারণ ছিল আরও গভীরে— ধ্বংসাত্মক, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থার ফলে সৃষ্টি হওয়া অর্থনৈতিক বৈষম্য। ক্ষমতা ধরে রাখতে আওয়ামী সরকার এই বিক্ষোভ দমন করতে ধারাবাহিকভাবে আরও সহিংস পন্থা অবলম্বন করেছিল।

‘গণবিরোধিতার মুখে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সাবেক সরকার সচেতনভাবে পরিকল্পিত ও সমন্বিত কৌশল হিসেবে এই নৃশংস দমননীতি গ্রহণ করেছিল,’ বলেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক।

আরও পড়ুন: জুলাই অভ্যুত্থানে ১৪শ’র বেশি মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে থাকতে পারে: জাতিসংঘ

তিনি আরও বলেন, ‘বিক্ষোভ দমন কৌশলের অংশ হিসেবে শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যা, ব্যাপকভাবে নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন সংঘটিত হয়েছে— এবং তা রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে, তাদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় পরিচালিত হয়েছে বলে যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। ’

‘আমাদের সংগ্রহ করা সাক্ষ্য ও প্রমাণ ভয়াবহ একটি চিত্র তুলে ধরে, যেখানে রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু করে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যতম গুরুতর উদাহরণ, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবেও গণ্য হতে পারে,’ যোগ করেন ভলকার তুর্ক। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এবং জাতীয় পুনর্মিলনের জন্য জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। ’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে একটি দল পাঠায়। এই দলে মানবাধিকার তদন্তকারী, একজন ফরেনসিক চিকিৎসক এবং একজন অস্ত্র বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যারা প্রাণঘাতী এসব ঘটনার ওপর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ অনুসন্ধান পরিচালনা করেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তদন্ত প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা করেছে, প্রয়োজনীয় প্রবেশাধিকারের অনুমতি দিয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ প্রাসঙ্গিক নথিপত্র সরবরাহ করেছে।

সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যারা সরাসরি বিক্ষোভ দমন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও শীর্ষ কর্মকর্তারা নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীকে পরিচালনা ও পর্যবেক্ষণ করেছেন। এই বাহিনী ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা করেছে অথবা নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে এবং অবৈধ উপায়ে বিক্ষোভকারীদের হত্যা বা পঙ্গু করে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে। এমনকি কিছু ঘটনায় লোকজনকে খুব কাছ থেকে গুলি করার প্রমাণও পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি ঘটনার বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যার মধ্যে আবু সাঈদের ঘটনাটি অন্যতম। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিক্ষোভ চলাকালে তিনি পুলিশের উদ্দেশে হাত প্রসারিত করে বলেন, ‘আমাকে গুলি করো। ’

ভিডিও ফুটেজ, স্থিরচিত্র এবং ভূ-অবস্থান প্রযুক্তি ব্যবহার করে, তদন্তকারীরা তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছিল, তা সাক্ষ্য প্রমাণের জন্য পুনঃনির্মাণ করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যের সঙ্গে এর মিল পাওয়া গেছে।

ফরেনসিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, আবু সাঈদকে কমপক্ষে দুইবার শটগানের ধাতব গুলি দিয়ে প্রায় ১৪ মিটার দূর থেকে গুলি করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আবু সাঈদ পুলিশের পরিকল্পিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

আরও পড়ুন

এবার রাউজানে বিএনপির ৫ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ

আগামীর ব্যালট হবে বুলেটের বিরুদ্ধে: হাসনাত আবদুল্লাহ

সৌদিতে অননুমোদিত সভা-সমাবেশে কঠোর ব্যবস্থা: সতর্কতা দূতাবাসের

অতিথি আপ্যায়নে চমক দিন ভাপা ডিমের কোরমা দিয়ে

চট্টগ্রামে গণসংযোগে এমপিপ্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ, বিএনপিকর্মী নিহত

নির্বাচন হলে দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে: সেনাসদর

অবশেষে জাতীয় দলের কোচের পদ ছাড়ছেন সালাউদ্দিন

কলি থেকে শাপলা ফুটতে বেশিদিন লাগবে না: সারজিস আলম

কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পরিবারের পাঁচজন নিহত

মামদানির জয়, প্রথম মুসলিম মেয়র পেলো নিউইয়র্ক

অনলাইনে জুয়া খেললেই গতি কমবে ইন্টারনেটের, বন্ধ হবে বিকাশ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ বিলিয়ন ডলারে সয়াবিন কিনবে তিন প্রতিষ্ঠান